বাজারে বেড়েই চলছে পিঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যটির দাম পাইকারিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে ১৫ টাকা। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও মনিটরিং বাড়ালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পিঁয়াজ ভারত-মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয় বলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কোনো ধরনের প্রভাব নেই বলেও জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রামের খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা। বর্তমানে ভারতীয় নাসিক পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায়।

এ ছাড়া দেশি মেহেরপুরী পিঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা এবং মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত পিঁয়াজ এখনো বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ হচ্ছে না। এসব পিঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী মেসার্স ইরা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘পাইকারি বাজারে ভারতীয় পিঁয়াজের দাম বেড়ে মানভেদে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া দেশের মেহেরপুরের পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। মৌসুমের শেষদিকে হলেও এখনো দেশের অন্যান্য জেলার পিঁয়াজ পাইকারি বাজারে আসেনি। যার কারণে পিঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে। পাইকারি বাজারে দাম সামান্য বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে পিঁয়াজের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রভাব নেই বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রমজান সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও পিঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। অস্থির হয়ে ওঠছে নিত্যপণ্যের বাজারদর। ব্যবসায়ীদের একটি চক্র এই বাজার অস্থিরের চেষ্টা করেন। প্রশাসন আন্তরিক এবং কঠোরভাবে মনিটরিং করলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে জানান তিনি।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, রমজান এলেই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ানোর তৎপরতা শুরু করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী ও মজুদদার। এবার রমজান সামনে রেখে একটি গোষ্ঠী পিঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করতে পাঁয়তারা করছে। প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং ও নজরদারি থাকলে নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।

দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের আড়ত সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পিঁয়াজসহ মসলাজাতীয় পচনশীল পণ্যের দামে পড়েনি। রমজান সামনে রেখে একশ্রেণির ব্যবসায়ী পণ্যগুলোর দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিজনিত কারণে গুজব রটিয়ে অনেকে পিঁয়াজসহ মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়াতে তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়লে পিঁয়াজের বাজার দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থিতিশীল হয়ে যাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

 

কলমকথা/ বিথী